দেশ-বিদেশে ওসি প্রদীপের যত সম্পদ (ভিডিও)
চাকরি জীবনের মাত্র ২৪ বছরে অঢেল সম্পদ গড়েছেন আলোচিত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে নামে বেনামে রয়েছে তার একাধিক বাড়ি, প্লট ও ফ্ল্যাট। অর্থ বিনিয়োগ করেছেন বিভিন্ন ব্যবসায়। বিদেশেও পাওয়া গেছে সম্পদ। অভিযোগ রয়েছে জোর করে দখল করে অথবা মিথ্যা মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে এই সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাথরঘাটায় দৃষ্টিনন্দন ছয়তলা বাড়ির মালিকানা ওসি প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকির নামে। শুধু পাথরঘাটা নয় নগরীর মুরাদপুরেও কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমি রয়েছে ওসি প্রদীপের। আর এসব জায়গার সম্পত্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষকে হয়রানি করে জবরদখল করে নেয়া হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
এলাকায় ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি জানান, প্রায় ৫শ’ থেকে ৭শ’ ক্যাডার এনে তাণ্ডব চালিয়ে মুরাদপুর ১ নম্বর রেলগেটের জায়গাসহ আরও দুটি জায়গা এক রাতে দখল করে নিয়েছেন তিনি। তার ইন্ধনের মাধ্যমে ইয়াবা মামলায় সিস্টেম করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি কখনও সিগারেটও খাই নাই। আমার ছোট ছোট বাচ্চা, আমার পরিবার, সমাজে কারও সামনে মুখ দেখাতে পারছি না এবং কাউকে বিশ্বাস করাতে পারছি না আমি ইয়াবা ব্যবসা করি না। ওসি প্রদীপ আমার মানসম্মান সব নষ্ট করেছেন।
ভুক্তভোগী এক নারী জানান, ৩২০০ পিস ইয়াবা দিয়ে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ার দিতে চেয়েছিলেন তিনি। একটা মিথ্যা মামলা দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালে দুদকে জমা দেয়া হিসেবে দেখা যায়, স্ত্রীর নামে ৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকার সম্পত্তি গড়েছেন এই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। এর বাইরেও দেশ ও দেশের বাইরে সম্পত্তি রয়েছে প্রদীপ দাশের। এছাড়া কক্সবাজারে ফ্ল্যাট, ২টি গাড়ি, ৪৫ ভরি স্বর্ণসহ ব্যবসা আছে প্রদীপের। জায়গা দখল বাণিজ্যে নিজের সৎ বোনকেও ছাড়েননি তিনি। ভুক্তভোগী ওসি প্রদীপের বড় বোন রত্না প্রভাও এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।
২৪ বছর আগে এসআই হিসেবে পুলিশে যোগ দেন প্রদীপ। পরে পদোন্নতি পেয়ে হন ওসি। ঘুরে ফিরে পোস্টিং নিতেন শুধু সিএমপি আর কক্সবাজার জেলায়। একজন ওসির এতো বিত্ত-বৈভব নিয়ে বিস্মিত স্থানীয় সাংবাদিকরাও।
চট্টগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিক রতন কান্তি দেবাশীষ জানান, ৪০ থেকে ৪৫ হাজার বেতন পেয়ে ঢাকায় বাড়ি চট্টগ্রামে বাড়ি দেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়ি, ব্যাঙ্গালোরে বাড়ি এবং বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি রয়েছে বলে আমরা জানতে পেয়েছি। তিনি বিদেশে টাকা পাচার করেছেন বলেও শোনা যায়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রাম জেলার এ্যাডভোকেট আকতার কবির জানান, এনবিআর এবং দুদককের উচিৎ কোনো প্রভাব মুক্ত হয়ে তদন্ত করে সত্যিকারে তথ্য বের করে আনা। অপরাধ প্রমাণিত হলে প্রাথমিক অবস্থায় আইনের আওতায় আনাই হচ্ছে আজকের জন দাবি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’র চট্টগ্রাম জেলা সম্পাদক বলেন, এখন পুলিশকে ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। অনিয়ম দুর্নীতি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ তার।
২০১৮ সালে প্রদীপের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজ শুরু করে দুদক। এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে না চাইলেও যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হবে বলে জানায় দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম।
এনএম/জিএ
মন্তব্য করুন